NEWS HUNGAMA
কলকাতা, জুলাই 20, 2022, খবর News Hungama
আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং ভারত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রসারতা নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে ডেটলাইন মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর প্রাক্তন গভর্নর ডঃ আতিউর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বন্ধন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষ, সাংবাদিক এবং কলকাতা প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি স্নেহাশিস সুর, সাংবাদিক মানস ঘোষ, প্রণব সরকার।
ডক্টর আতিউর রহমান বলেন, “বিগত যে পরিস্থিতি দিয়ে চলছি তাতে বিশ্বব্যাপী এক অর্থনৈতিক অশান্তিতে আমরা ছিলাম। আমরা ধীরে ধীরে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠছিলাম কিন্তু তার মধ্যে তেলের দাম, জাহাজের খরচ বিভিন্ন বেড়েছে। এই সব কিছুরই মাঝেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রভাব ফেলেছে। যত দিন যাচ্ছে তত দেখা যাচ্ছে ডলারের দাম আরো বাড়ছে এবং আমাদের মুদ্রা মান অনেক কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি খরচ সস্তা হলেও আমদানি খরচ ঊর্ধ্বমুখী যার ফলে ঘাটতি হচ্ছে বাণিজ্যে। অন্যতম বিষয় হলো যেই দেশে কৃষিতে শক্তিশালী রয়েছে সেই দেশ এই সংকটকালে নিজেদের ভালোভাবে ধরে রেখেছে। অন্যদিকে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হচ্ছে এবং তা সামাল দিতে গিয়ে সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণও বাড়াতে হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং যোগাযোগ নিয়ে এই যে আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংকটের সময় আমরা একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে যদি দুই দেশ কাজ করতে পারি তাহলে তা উভয়ের পক্ষেই উপকার।”
দুই দেশের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে ডঃ রহমান সদ্য উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,”সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে এই পদ্মা সেতু তৈরি হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দেশের ২১ টি জেলা যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছে খুব সহজেই।
তার কথায় বাংলাদেশে যদি ভারতের কোন বিনিয়োগকারী নিজেদের বিনিয়োগ করতে চায় তাহলে তা অতি সহজেই করতে পারবে, কিন্তু ভারতে যদি কোন বাংলাদেশের বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে চায় সেক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনে জটিলতায় পড়তে হয়। এই সমস্ত বিষয়কে সরকার পর্যালোচনা করুন এবং সেই সমস্ত বাধা সরিয়ে কাজ যাতে ত্বরান্বিত হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখুক। ভারত সরকার যাতে আরও বেশি করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সেই আবেদন আমি রাখছি। তবে বিগত দিন থেকে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আগে থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার আসার পর বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতের কাছ থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে এবং আগামী দিনে তা বাড়বে।”
চন্দ্রশেখর ঘোষ তার নিজের বক্তব্যে বলেন, “ডক্টর আতিউর রহমান একজন অভিজ্ঞ তিনি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করার বিভিন্ন পথ দেখিয়েছেন। ভারত থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করা হয় এবং আগামী দিনে তা আরো বাড়বে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। বিগত সময়ের থেকে বর্তমান সময় দুই দেশের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন, বিমান, জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে । কথায় আছে যে কোন তথ্য আদান প্রদান করলে তার দ্বিগুন হয়ে যায় তত্ত্ব ভাণ্ডার। সেই জন্য দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রধান হলে আরো উন্নতি হবে। এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও দুই দেশকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট পদ্মা সেতু এর ফলে মানুষে মানুষে সংযোগ বাড়িয়ে তুলেছে মত সাংবাদিক স্নেহাশীর সুরের।”
বাংলাদেশে কোটি কোটি চাষীদের হাতে ব্যাংকের বই তুলে দিয়েছেন এবং রবীন্দ্রনাথের যে গ্রাম বাংলার ভাবনা ছিল তা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা করেছেন আতিউর রহমান এ কথা বলেন আলোচনায় উপস্থিত সাংবাদিক মানুষ ঘোষ।
এই আলোচনায় উপস্থিত আরও ব্যক্তিদের মুখে দুদেশের সম্পর্ককে আরও উন্নত করার জন্য বিভিন্ন ইতিবাচক মত শোনা যায়। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ঋত্বিক মুখার্জি।অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর সৌমজিৎ রায়, প্রফেসর পি লিং , বিজয় দাস নির্মাল্য নাগ প্রমুখ ।